এম জামাল হোসেন : কোচিং সেন্টারে পাঠদানের নামে একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ১২ মিনিটের ভিডিও নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় শুরু“ হয়েছে। অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক নুরুল হক সরদারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। সূত্রমতে, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক সরদার স্কুলের পাশে ভাড়াকৃত কক্ষে শুধু ছাত্রীদের জন্য কোচিং সেন্টার খুলে নিজেই পাঠদান করেন। ওই কোচিং সেন্টার থেকে ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে, যতক্ষণ তিনি পাঠদান করছেন ততক্ষণই তিনি ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত রাখছেন। এতে ছাত্রীরা বিব্রত বোধ করায় তিনি বেত হাতে নিয়ে সামনে ঘোরাঘুরি করছেন। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় ও বরিশালের সংবাদকর্মীরা ওই বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর পরই তাদের দেখে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল হক সরদার দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের দৌড়ে পালানোর দৃশ্য দেখে শ্রেণী কক্ষের বাইরে বেরিয়ে আসে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্যের মদদে প্রধান শিক্ষক নুরুল হক সরদার একের পর এক অপর্কম করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য যে, এর আগে স্থানীয় প্রশাসন ও বরিশাল মহিলা পরিষদ নেতৃবৃন্দ অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির ব্যপারে আলোচনা করে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ওই শিক্ষকের নামে নিয়মিত মামলা করার জন্য উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে চিঠি প্রদান করা হয় এবং এমপিও বাতিল করে শিক্ষককে বরখাস্ত করার জন্য সুপারিশ করে। এরপর প্রায় দেড় মাস আত্মগোপনে থেকে ঈদ ছুটির পরে গত সোমবার থেকে বিদ্যালয়ে যোগ দেয় প্রধান শিক্ষক নূরুল হক সরদার। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, শ্লীলতাহানীর ঘটনা সত্য প্রমানিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য থানাকে অবহিত করা হয়েছে। তবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম সরোয়ার জানান, সুনির্দিষ্ট কেউ অভিযোগ করেনি এজন্য মামলা করা হয়নি। বরিশাল মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পুষ্প চক্রবর্তী জানান, ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছে মহিলা পরিষদ। ওই শিক্ষকের শ্লীলতাহানীর ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা জন্য গত ৩১ মে মানববন্ধন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষককের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগের। এ ধরনের শিক্ষকদের নিকট শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ। এদিকে উপজেলার একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে প্রথমে তাদের নিকট সন্তানরা শিক্ষকের এ ধরনের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করলেও তারা বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষক নূরুল হক প্রতিদিনই এভাবে তাদের যৌন হয়রানি করতো। পরে খোঁজ নিয়ে তারা বিষয়টির সত্যতা পান। তবে সন্তানের ভবিষ্যত এবং সামাজিক সম্মানের কথা চিন্তা করে তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারছেনা বলে জানান। তবে এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাককরা।
উজিরপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিও নিয়ে তোলপাড়
