মু. জিল্লুর রহমান জুয়েল, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর গলাচিপার গোলখালী ইউনিয়নের ভূমী হীন মানবতার জীবনযাপন করছেন এক সন্তানের জননী তানজিনা বেগম। সরজমিনে উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের চার নংওয়ার্ডের ইসমাইল খানের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়। তানজিলা বেগমের , জন্মের পরে মা বাবার অভিমানে বিচ্ছেদের ফলে মা অন্যত্র বিবাহ বসেন এবং বাবাও অন্যা জায়গায় বিবাহ করে সেখানেই থাকেন। সে থেকেই আদরে অনাদরে অসহায় হয়ে মামা বাড়িতে থেকেই বড় হওয়ার পরে মামা, মামিরা বিবাহ দেন। আমার দাম্পত্য জীবনে ৪ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ওর নাম মোসা. দোলা। আমার স্বামী ঢাকাতে গার্মেন্টেসে চাকুরি করে এবং সেখানে আরেকটি বিবাহ করে ঢাকাতেই থাকে। বাবা, মা, স্বামী পাশে না থাকায় আমি এখন অসহায় জীবন যাপন করছি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন নারীরা এ দেশের বোঝা নয়। তাই তার কথাকে ভেবে স্বপ্নকে সত্যি করে নিজের কাছে টাকা না থাকায় পাশের বাড়ি থেকে একটি কোদাল নিয়ে সরকারী খাস জমিতে বেগুন, টমেটো, মরিচ, ধনিয়া, লাউ প্রভৃতি গাছ লাগিয়ে কিছু ফসল তৈরি করে কোন রকম বেচে আছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সন্ধ্যা হলেই পরের ঘরে ঘুমানোর জন্য আশ্রয় নিতে হয়। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রীর কাছে আমার দাবি সরকারীভাবে আমাকে একটি ঘর আর সরকারী জায়গাটি আমার নামে ডিসিআর করে দিলে সন্তান নিয়ে শেষ জীবনটুকু পার করে দিতে পারতাম। এ বিষয়ে মেয়ের মামা দেলোয়ার সিকদার জানান, আমার সংসারে ৮ জন লোক খায় এক আমার উপরে। আমি একজন হতদরিদ্র রিক্সা চালক। আমার সংসার চালাতেই কষ্ট হচ্ছে তার উপর ভাগ্নি ও তার মেয়েকে চালাতে আমার খুব কষ্ট হয়, যা একধরণের মানবেতর জীবনযাপন । এ বিষয় নিয়ে গোলখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মনির মীর বলেন, আসলেই মেয়েটি অসহায়। সরকারীভাবে একটি ঘর পেলে ওর জীবনে আবার আশার আলো দেখতে পারে।
গোলখালী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. খালেক খান বলেন, এই মেয়েটা বাবা মার কাছে কিছুই পায়নি। মামা বাড়ি থেকে বড় হয়েছে। মামা মামি ওকে বিবাহ দিয়েছে কিন্তু স্বামী তার কোন খোঁজ খবর না নেওয়ায় এখন মামার কাছে থাকে। সরকারীভাবে একটি ঘরে পেলে মেয়েটি নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারত।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এসকল ভূমী হীনদের জন্য সকল প্রকারের ধারাবাহিক সহযোগীতা দেয়ার কার্যক্রম চলমান আছে, সুযোগ হলে নিশ্চই তাকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিষ কুমার বলেন, নিশ্চই সুযোগ হলে তার মতো এসকল ভূমীহীনদের বিষয়ে সার্বিক ভাবে সহযোগীতা করা হবে।
গলাচিপায় ভূমী হীন এক সন্তানের জননীর মানবতার জীবনযাপন!
