ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তাঁরা লাঠি দিয়ে উপাচার্যের গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করেন এবং উপাচার্যকে আঘাত করার চেষ্টা করেন।
এ সময় উপাচার্যের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) রক্ষার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁকেও আঘাত করেন। উপাচার্য গাড়ির মধ্যে বসে থাকায় তিনি আহত হননি। তবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের দিকে জুতা ছুড়ে মেরে তাঁকে লাঞ্ছিত করেন।
আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রসপেক্টাসে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কক্ষে তালা দেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক গাড়িতে করে তাঁর বাসভবনের সামনে এলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা উপাচার্যের গাড়ি লক্ষ্য করে কিল, ঘুষি ও জুতাপেটা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের হাত থেকে রক্ষা করে তাঁকে বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে সহযোগিতা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘প্রসপেক্টাসে জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করায় দলের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা উপাচার্যের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তাঁর বাসভবনে প্রবেশে সহযোগিতা করি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রসপেক্টাসে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন শেষে টিএসসিতে এক আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রসপেক্টাসটি বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন এবং এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান।
প্রসপেক্টাসটির ১৯ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে জিয়াউর রহমান হলের পরিচয় দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। পরিচিতিমূলক লেখাটি লেখেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান।
সেই সঙ্গে এর ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় জগন্নাথ হলের বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তথা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং উপজাতি ছাত্রদের জন্য হল প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঢাবি উপাচার্যের গাড়িতে হামলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের
