বরিশাল ব্যুরো অফিস ঃ বরিশালে হাজার হাজার পরিবার এনজিও এবং দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের ঋণের বেড়া জালে জড়িয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে হাজার হাজার পরিবার। এলাকায় এনজিও সংস্থাগুলোর গ্রামীণ উন্নয়ন মূলক কয়েকটি প্রকল্প থাকলেও তা নিছক লোক দেখানো। গ্রামীণ সমাজ উন্নয়নের নামে এনজিওগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে কটি কটি টাকা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিল্প-কলকারখানা বিহীন বরিশাল জেলার অধিকাংশ গরিব মানুষ জীবিকার জন্য রিকসা-ভ্যান চালানো, মাছ চাষ এবং কৃষির উপর নিভরশীল । বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণের ব্যাপক প্রচারণা থাকলেও কৃষকগণ বিভিন্ন জটিলতার কারণে এ ঋণ গ্রহণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে শতকরা ৭৫ ভাগ গরিব জনগোষ্ঠী ঋণের জন্য বিভিন্ন এনজিও সংসহা, দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে ধরনা দেয়। এ সুযোগে এলাকার দাদন ব্যবসায়ী ও এনজিও গুলোর ঋণের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। ব্যাংকের তুলনায় এনজিও, দাদন ব্যবসায়ীদের সুদের হার চড়া। প্রতিমাসে শতকরা ২০-২৫ টাকা হারে দাদন ব্যবসায়ীর ও এনজিও ঋণের সুদ দিতে হয়। এনজিও গুলো কিস্তির টাকা পরিশোধের চাপে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। একটি কিস্তি পরিশোধ করতে না করতেই পরবর্তী কিস্তির টাকা পরিশোধের চিন্তা মাথায় চাপে। একটি সংস্থার
ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে তারা অন্য সংস্থার ঋণের বেড়া জালে জড়িয়ে পড়ে। ফলে উৎপাদন আয় থেকে ঋণের টাকা পরিশোধ করার সুযোগই আসে না অনেকের। কিস্তিরর টাকা পরিশোধ করতে না পারলে এনজিও কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা দল বেঁধে বাড়িতে এসে টাকা আদায় করে নেয়। অনেকে আবার ভয়ভীতি দেখায় ও বেলাংক চেক নিয়ে ঋণ দেয় চেক দিতে রাজী না থাকায় তাকে আর ঋণ দেয় না অনেক ভুইভর এনজিও। অপরদিকে, এলাকার দাদন ব্যবসায়ীরা টাকা দেয়ার সময় ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তির নিকট থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এসব দাদন ব্যবসায়ীর টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে সাদা স্ট্যাম্পে তার ইচ্ছা মতো টাকা বসিয়ে সুদের টাকা আদায় করে থাকে ও মামলায় জড়িয়ে দেয়। এভাবেই এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে অনেককেই ঘরবাড়ি, জমিজমা, হালের গরু ও ঘরের টিন, গাছ বিক্রি করতে হচ্ছে।
বরিশালে বহু পরিবার এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি
