যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি মসজিদের ইমামসহ দুইজন বাংলাদেশি অজ্ঞাত সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছেন শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরে।
এই দু্ই বাংলাদেশীর আত্মীয়-পরিজন এই ঘটনায় একেবারেই হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।
নিহতরা ‘টার্গেট কিলিং’ এর শিকার বলে মনে করছে পরিবার।
যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর আগে বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় হবিগঞ্জে একটি বড় মসজিদের ইমাম ছিলেন আলাউদ্দিন আকুঞ্জি।
ছেলেমেয়েদের সাথে বসবাসের উদ্দেশ্যে সস্ত্রীক নিউইয়র্কে পাড়ি জমানোর পরও ধরে রেখেছিলেন পুরনো সেই পেশা।
কুইন্সের ওজোন পার্কের মসজিদে নামাজ পড়িয়ে বের হয়েই আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ৫৫ বছর বয়স্ক মি: আকুঞ্জি।
ওই মসজিদটি ছিল ইমাম হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর দ্বিতীয় কর্মক্ষেত্র।
বাংলাদেশের সিলেটে হবিগঞ্জের নিজ বাড়িতে বসে টেলিফোনে বিবিসিকে এসব কথা জানান মি. আকুঞ্জির ছোট ছেলে ফয়েজ উদ্দিন আকুঞ্জি।
পিতার হত্যাকাণ্ডকে ‘টার্গেট কিলিং’ বা পরিকল্পিত হত্যা বলে মনে করছেন ফয়েজ।
ইমাম হত্যার ঘটনাকে ‘টার্গেট কিলিং’ ভাবছে পরিবার
শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর একটা পঞ্চাশ মিনিটে অজ্ঞাত এক সন্ত্রাসী পেছন থেকে তাদের মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়।
মি: আকুঞ্জির এই একটি ছেলেই বাংলাদেশে রয়ে গেছেন, বাকি চার ছেলে এবং আরো দুই মেয়ে পরিবার নিয়ে নিউ ইয়র্ক থাকেন।
তাঁদের বাসার দুরত্ব ওজোন পার্কের ওই আল ফোরকান জামে মসজিদ থেকে ৫ মিনিটের হাঁটা পথ।
মি: আকুঞ্জির নিউ ইয়র্ক প্রবাসী ছেলেদের একজন নাইম উদ্দিন আকুঞ্জি জানাচ্ছেন, পুলিশ তাদেরকে জানিয়েছ যে তাঁর পিতার মৃতদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করতে আরো সময় লাগবে।
মৃতদেহ পেলেই তাঁরা ঠিক করবেন তাঁদের বাবাকে যুক্তরাষ্ট্রে দাফন করবেন নাকি বাংলাদেশে নিয়ে আসবেন।
নাইম উদ্দিন কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন।
তাঁর বাড়িতে শোকাবহ পরিস্থিতি, তাঁর মা শোকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন বলে জানান মি: নাইম।
ইমাম হত্যার ঘটনাকে ‘টার্গেট কিলিং’ ভাবছে পরিবার
ইমাম হত্যার ঘটনায় নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশিদের শোক।
নিহত আরেক বাংলাদেশী তারা মিঞা ইমাম আলাউদ্দিন আকুঞ্জির প্রতিবেশী ছিলেন এবং প্রতিদিন দু’জনে একসঙ্গে মসজিদে যেতেন নামাজ পড়তে, জানিয়েছেন নাইম।
তারা মিঞার বয়স ৭৫। তিনি বছর চারেক আগে সিলেটের গোলাপগঞ্জ থেকে নিউ ইয়র্ক প্রবাসী ছেলেমেয়েদের কাছে পাড়ি জমান।
বার্ধ্যক্যজনিত নানা অসুখ-বিসুখে ভোগা এই ব্যক্তি তেমন কোন কাজকর্ম করতেও অক্ষম ছিলেন।
গোলাপগঞ্জ থেকে মি: মিঞার একজন জামাতা ইমরান হোসেন শাহীন বিবিসিকে বলছিলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় তারা বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে পড়েছেন।
মি: হোসেনের সাথে কথা বলতে বলতেই তাঁর বাড়িতে র্যাবের সদস্যরা যান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, এর আগে পুলিশও এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করে এসেছে।
কেন এই জিজ্ঞাসাবাদ জানতে চাইলে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, যেহেতু নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশে থাকেন এবং এখানে তাদের বাড়িঘর আছে, তাই তারা ঘটনা সম্পর্কে স্বত:প্রণোদিত হয়ে অবহিত হচ্ছেন এবং তথ্য সংগ্রহ করছেন।
ভাবছে পরিবার’ ইমাম হত্যার ঘটনাকে ‘টার্গেট কিলিং
