আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, অবরোধ বা ধর্মঘট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে হাই কোর্ট। যারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে ধর্মঘট ডাকবে, তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সেতু সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, র্যাবের ডিজি, বিআরটিএ ও বিআরটিসির চেয়ারম্যান, পুলিশের আট বিভাগের ডিআইজি, সড়ক পরিবহন কর্মচারী ফেডারেশন, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এবং খুলনা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
দুই চালকের সাজার রায়ের প্রতিবাদে সারা দেশে দুদিন ধরে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের প্রেক্ষাপটে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ এই রুল জারি করে। সেই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশে স্বাভাবিক যান চলাচল নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এই আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে তাদের।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ধর্মঘটে সারা দেশে দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। বুধবার ঢাকায় নগর পরিবহনের বাসও বন্ধ রাখা হয়। ফলে শিক্ষার্থী, অফ্সিগামী যাত্রীসহ সাধারণ মানুষকে রাস্তায় বেরিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই প্রেক্ষাপটে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদ বুধবার হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্েয রাস্তায় গণপরিবহন চালু করার পাশাপাশি ওই সময়ের মধ্যে লিখিতভাবে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে। ওই সময়ের মধ্েয ধর্মঘট প্রত্যাহার করে গাড়ি চলাচল শুরু না হলে ধর্মঘটী মালিকদের গাড়ি জব্দ করে তা প্রশাসনের মাধ্যমে লিজ দিয়ে পরিচালনা এবং যেসব চালক গাড়ি চালাতে অস্বীকার করবেন, তাদের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনাও চাওয়া হয়। এই আবেদনের ওপর শুনানিতে অংশ নেন মনজিল মোরসেদ নিজেই। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। আদেশের পর মনজিল মোরসেদ বলেন, বিচারিক আদালতে দুই চালকের সাজার পর ধর্মঘট ডেকে জনজীবন বিপর্যস্ত করা হয়েছে, জনগণের স্বাধীন চলাচলের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে।
এসব বিবেচনা করে রিটটি দায়ের করা হয়েছিল। শুনানিতে বলেছি, সংবিধানের অধীনে গঠিত আদালত যদি কোনো রায় দেয়, তাতে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করতে পারে। কিন্তু তারা আপিল না করে রায়ের বিরুদ্ধে ধর্মঘট ডেকে সাধারণ মানুষের চলাচলের পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। সমস্ত মানুষকে হয়রানি করছে। এ আইনজীবী বলেন, তারা আদালতের কাছে চারটি অন্তর্র্বতীকালীন আদেশ চেয়েছিলেন। কিন্তু শুনানির সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ার কথা জানালে তিনটি বিষয় আর উপস্থাপন করা হয়নি।
হাই কোর্ট:রায়ের বিরুদ্ধে ধর্মঘট ডাকলে শাস্তি নয় কেন :
